এখন চলুন দেখি বাংলাদেশে বিটকয়েনের অবস্থান নিয়ে। বাংলাদেশ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসাবে বিটকয়েন ফাউন্ডেশনে অন্তর্ভুক্ত হয় ২০১৪ সালের ১৫ আগস্টে। কিন্তু বিটকয়েন ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার ঠিক এক মাসের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় বিটকয়েনের সকল লেনদেনের উপর। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দেশে বিটকয়েনের সকল প্রকার লেনদেন থেকে জনগণকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানায়। অর্থাৎ বিটকয়েন লেনদেনকে সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে বিটকয়েনের উপর এই নিষেধাজ্ঞা বজায় রয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে আমরা পিছয়ে পড়ছি ক্রিপ্টকয়েন দুনিয়ায়। আশা করছি অনতিবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে।
সরকার ও বিটকয়েনবিটকয়েনকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা বা এটিকে অন্য কোনোভাবে কেনা বা বিক্রয় করাকে বিশ্বের সাতটি দেশ বেআইনি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অন্য দেশগুলো হচ্ছে নেপাল, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, মরক্কো, আলজেরিয়া ও কিরগিজস্তান। উবার, লিফটসহ অন্যান্য নতুন উদ্ভাবনের মতোই এটিও নিয়মনীতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সরকারকে মুশকিলে ফেলে দিয়েছে। তবে এর আয়কর-কাঠামো, উত্তরাধিকার ইত্যাদি নানান বিষয়ে নীতি প্রণয়নের কাজ চলছে। সরকারের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সত্ত্বেও গণমানুষের এই নতুন প্রযুক্তিতে উৎসাহের কোনো কমতি নেই। পৃথিবীর দেশে দেশে বিশেষ করে আমেরিকা, চীন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, ইসরায়েল, ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে বিপুল উৎসাহে মাইনাররা বিটকয়েন নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে। ব্লক চেইন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে সেসব দেশে নতুন নতুন সম্ভাবনাময় কোম্পানি সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাপারটা যেন নজরুলের সেই কবিতার লাইন, কে রোধিবি এই জোয়ারের টান, গগনে যখন উঠেছে চাঁদ।