বিশ্বের বড় বড় ওলামাকেরাম বিভিন্ন মন্তব্য করেন যে বিটকয়েন সাধারণত অপরাধমূলক প্রবণতায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়, যেমন বিটকয়েন দিয়ে অনলাইন কেসিনো, অনলাইন জুয়া, আন্তর্জাতিক চোরাচালান , অস্ত্র কেনাবেচা, নারী পাচার ইত্যাদি অপরাধমূলক কার্যসম্পন্ন হয় বলে একে হারাম কারেন্সি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
এটা বিটকয়েন কে নাজায়েজ ঘোষণা করার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি। মিশরের ইসলামী ফতোয়া প্রদানকারী সংস্থা দারুল ইফতা জানায় , বিটকয়েন দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর এবং এটা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং কেন্দ্রীয় আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে দিতে পারে। আরো বলা হয় এই মুদ্রা নিয়ম-শৃঙ্খলা বহির্ভূত যা ইসলামে চুক্তি বিনষ্ট করা বিবেচিত হয়। এ বিষয়ে আরো জানতে নিচের সোর্স টি দেখতে পারেন:
সোর্স:
https://www.banglatribune.com/foreign/africa/278843 আর ইসলামে ফতোয়া দেয়া হয় চারটি বিষয়ের ভিত্তিতে: ১) কুরআন ২) সুন্নাহ ৩)ইজমা ৪) কিয়াস ।
যে বিষয়গুলো সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা আছে সে বিষয়গুলো অবশ্যই নাজায়েজ। আর দিনে দিনে দুনিয়াতে অনেক কিছুই আসবে এবং অনেক কিছুরই মানুষ সম্মুখীন হবে যেগুলো সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে সরাসরি নিষেধ বলা থাকবে না। তখন আমাদের ইজমা ও কিয়াস এর ভিত্তিতে ফতোয়া প্রদান করা হবে। ইজমা হচ্ছে অধিকাংশ মুসলমানের মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া কোন সিদ্ধান্ত। আর আর যখন কুরআন ও হাদিসে কোন বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না তখন কিয়াস বা অনুমানের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে তাই আমি মনে করি আস্তে আস্তে বিটকয়েন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের ধারণা ও ফতোয়া প্রদানকারী সংস্থাদের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়তো আসতেও পারে। তবে একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই কুরআন সুন্নাহ ইজমা ও কিয়াস মেনে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
বিটকয়েন ব্যবহার করে যদি মানুষ ইনকাম করে তার ফ্যামিলিকে স্বনির্ভর করতে পারে, তাহলে বিটকয়েনে উপার্জিত টাকা দিয়ে কেন কুরবানী হবে না বা কেন আলেমরাই এই ধরনের বাজে বক্তব্য পেশ করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে এবং মানুষের ঈমান নষ্ট করবে? এই অধিকার কি আলেমদের দেয়া হয়েছে, ভাই?
আশা করি উপরের আলোচনায় আপনি আপনার উত্তর পেয়ে গেছেন। এবং কিভাবে ফতোয়াটি এসেছে এই বিষয়েও যথেষ্ট ধারণা হয়ে গেছে। তাই মুফতি ও ফতোয়া প্রদানকারীদের এইরকম দৃষ্টিকটু ভাবে দোষারোপ না করে নিজেও কিছুটা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। পরিশেষে একটা কথাই বলবো নিজের বিবেক সবচাইতে বড় আদালত। হয়তো মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার বিবেককেই গ্রহণ করতে পারেন। আর আল্লাহ চাইলে শিরক ব্যতীত যেকোনো গুনাহ মাফ করে দিতে পারেন।