বাঙালি কথাটা কোথা থেকে এসেছে জানেন?
বন + জঙ্গল = বঙ্গাল
বঙ্গালের অপভ্ৰংশ হলো বাংলা
আর বঙ্গালী থেকে এসেছে বাঙালি
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ন এলাকা ছিল বন জঙ্গলে ভরা। এই অঞ্চলকে বহির্বিশ্ব বঙ্গাল বা বাংলা বলে জানতো। এখানকার অধিবাসীদের ভাষা ছিল বাংলা আর তাদের বঙ্গালী বা বাঙালি বলা হতো। বিবর্তনের পথে সেখান থেকে আমরা অনেকদূর এগিয়ে এসেছি। কিন্তু, অন্যের পুকুরে বিষ দেওয়া, বাগানের ফল চুরি করা, নেটের তার কেটে দেওয়া... এগুলোর মূলে আছে সেই বন-জঙ্গলের সময়কার আদিম প্রবৃত্তি। প্রান্তিক জনতাকে এর থেকে বার করে সভ্য করার কাজ সহজ নয়।
ভাই আপনি এতো সুন্দর করে বাঙ্গালী কথাটা বুঝিয়ে দিয়েছেন যার কোন তুলনা হয় না। আচ্ছা ভাই ২৬ শে সেপ্টেম্বর সারা পৃথিবীতে একযোগে আসতেছে অথচ বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে এই ২৬ শে সেপ্টেম্বর। আজ সন্ধ্যায় একটি চা স্টলে বসে আছি হঠাৎ করে একটি লোক এসে বলল ২৬ শে সেপ্টেম্বর নাকি শেখ হাসিনা দেশে আসছে। আরে বাঙ্গালী ভালো করে খোঁজ করে দেখো হঠাৎ করে শিরোনামে ২৬ শে সেপ্টেম্বর কি হতে যাচ্ছে এটা দেখেই কিভাবে তুমি অনুমান করলে ২৬ শে সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা দেশে আসছে। বাঙালিরা কথার সারমর্ম বোঝার আগেই মিথ্যাটাই আগে ভাইরাল করে দেয়।
বাঙালির দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই বরং এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহ্য হিসেবে ধরে নিতে হবে।
আচ্ছা ২৬ তারিখ আমাদের দেশে একটা আলোচিত বিষয় পরিণত হবে না কেন?
আমরা জাতি হিসেবে অথবা ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য লুকায়িত করে আছে সেটা হচ্ছে এই নিল ওই নিল যাহ কান নিয়েছে চিলে, কানের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে। কবিতাটি যদি কেউ পড়ে থাকেন তাহলে এটা সারমর্ম বুঝতে পারবেন। আমাদের বাঙ্গালীদের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমরা যেটা শুনি সেটা অন্যের কাছে তার চেয়ে বেশি করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করি। আমরা যত বেশি বাড়িয়ে বাড়িয়ে উপস্থাপন করব তত বেশি মিথ্যে দিয়ে বিষয়টি বোঝাতে হবে। এভাবে মিথ্যা দিয়ে বিষয়টি বোঝাতে বোঝাতে এক সময় ওই মিথ্যাটাই সত্য হয়ে যায়।
২৬ তারিখে Hamster Kombat পেমেন্ট দেওয়ার কথা। আপনি যদি সোসিয়াল মিডিয়াতে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন তাহলে বিষয়টা আপনার বোঝার বাকি থাকার কথা না। ফেসবুক, টিকটক, বিভিন্ন শর্ট ভিডিওতে বিষয়টি এমনভাবে ভাইরাল হয়েছে যে পৃথিবীর অন্য কোন ঘটনা এভাবে ভাইরাল হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
হবেই না কেন?
৩০০ মিলিয়ন ইউজার
মানে ৩০০ মিলিয়ন বিষয়টি যদি আমি অল্প কিছু জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত দেশগুলোর সাথে তুলনা করি তাহলে আমার মনে হয় ৩০টিরও বেশি দেশে জনসংখ্যা একত্রিত করে তুলনা করলে হামস্টার কমবাটের সমান হবে। মানে ৩০ টি দেশের জনসংখ্যা একত্রিত করলে হামিস্টার কমবাটের কমিউনিটি মেম্বারের সমান।
তাহলে বুঝেন ভাইরাল হবে না কেন?
এবার আসি আমার দেশের প্রেক্ষাপটে?
ধরেন আমার দেশের জনগণ বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেবে না কেন? আমরা জুলাই আগস্ট এই দুটো মাসকে রক্তাক্ত অধ্যায়ের বিভীষিকাময় মাস বলে আখ্যায়িত করেছি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কয়েকদিন আগে শেখ হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে সেখানে টুপ করে বা চট করে বাংলাদেশে প্রবেশের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। এই কথাটা যদি আপনার বা আমার মত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ মেম্বাররা জানে তাহলে বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন থাকবে। কিন্তু কোন কম জানা লোক যদি বিষয়টি শুনে থাকে সে মনে রাখবে হয়তো শেখ হাসিনা যেকোনো সময় বাংলাদেশে আসতে পারে।
২৬ শে সেপ্টেম্বর আমাদের হ্যামস্টার কনবাট পেমেন্ট করবে এটা আমরা যারা অনলাইনে একটিভ থাকি তারা বিষয়টি জানি। কিন্তু চাই স্টলে বসে থাকা চাচা টাইপের কিছু লোকেরা এ বিষয়টি জানে না। এমনকি হামিস্টার কমবাট এটাই কি তারা বলতে পারবে না। তাদের মনে একটাই ধান্দা যেহেতু ২৬ শে সেপ্টেম্বর বিষয়টি খুব আলোচিত সেহেতু এই দিনেই হয়তো শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রবেশ করবে। এ কারণেই আওয়ামীপন্থী কিছু লোকজনেরা মুখে মুখে বলে বেড়াচ্ছে আর আমাদের টেনশন করার দরকার নেই আমরা আগামী ২৬ তারিখে আবার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসবো।