এটা কোনো হাস্যকর কথা না ভাই। দেশের প্রায় বেশ কিছু ব্যাংক একদম দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পথে। চিন্তা করে দেখেন যাদের ব্যালেন্স কোটি টাকা, এরকম ১০ হাজার টাকা করে তারা কত বছরে সেই টাকা তুলতে পারবে? আমি যতটুকু শুনেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক টাকা ছাপিয়েছে এসব ব্যাংক গুলো বাচানোর জন্য। টাকা গুলো ব্যাংকে দিলে ব্যাংক হয়তো বেচে যাবে, কিন্তু আপনি যদি ১ লাখ টাকা রেখে থাকেন, সেটার ভ্যালু হয়ে যাবে ৬০ হাজার টাকার সম পরিমান।
হাস্যকর কথাটি বলার কারণ হচ্ছে আমি ব্যাংকে টাকাগুলো রেখেছিলাম শুধুমাত্র সিকিউরিটি এর জন্য যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রাখেনি ভেবেছিলাম এখানে সিকিউরিটি এর অভাব। এখন সোজা বাংলায় এ কয়েক বছরে এমনিতেই সেই টাকার সুদ আসছে মাত্র 78 হাজার টাকার মতন আর অন্যদিকে যদি আমি মুদ্রাস্ফীতি হিসাব করি তাহলে এটি এক লাখ টাকার উপরে হয়েছে যদি ২০ পার্সেন্ট ধরি।
তাছাড়া খেলা দেখেন সিকিউরিটি এর কারণে ব্যাংকে রেখেছিলাম যেন যখন তখন টাকাগুলো উঠাতে পারি। তখন বিট কয়েন নেমেছিল ১৫ হাজার এর ঘরে ইনভেস্টমেন্ট করে নি যে এখানে ইনভেস্টমেন্ট করলে হয়তোবা যখন তখন টাকা উঠাতে পারবো না কারণ বিটকয়েনের ভোলাটিলিটি এর কারণে। ভাগ্যের খেলা দেখেন ব্যাংকে টাকা রয়েছে কিন্তু ইমারজেন্সি সিচুয়েশনের জন্য গিয়েছিলাম টাকা উঠাতে কিন্তু সেটা আর উঠাতে পারলাম না। বলে যে কয়েকদিন সময় দেন।
টাকা আপনি কোথায় রাখবেন সব জায়গাতেই রিস্ক। কিছু কিছু ক্রিপ্টো কয়েন চোখের সামনে কোথায় থেকে কোথায় চলে গেল কিন্তু শুধু দেখে গেলাম কিছুই করতে পারলাম না। এদিকে ব্যাংকে টাকা রাখি নিয়মিত খরচ এবং ইমারজেন্সি মুহূর্তে যেন টাকাগুলো তাৎক্ষণিক পাওয়া যায় তার জন্য সেখানেও মুদ্রাস্ফীতির কারণে দিন দিন টাকার মান কমে যাচ্ছে। আবার ব্যাংক দেউলিয়া হবারও ভয় থাকে। আমি একবার নিউজে দেখেছিলাম যে যদি আপনি কোন ব্যাংকে টাকা রাখবেন আর সেই ব্যাংক যদি দেওলিয়া হয়ে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্সুরেন্স থেকে। এদিকে ক্রিপ্টোতে রাখবো সেখানেও রয়েছে ভয় কারন ইমারজেন্সি সময়ে সেখান থেকে টাকা তুলতে গেলে হয়তোবা অনেক লসের সম্মুখীন হতে হবে এই ভেবে ক্রিপ্টোতে টাকা রাখা হয় না আর খুব বেশি পরিমাণে টাকা নেই যে কিছু অংশ ক্রিপ্টোতে রাখবো। বিজনেসে করবো সেখানেও ভয়। আসলে ভাই গরিব মানুষের জন্য এই পৃথিবী নয়। যাদের টাকা আছে তারাই আরো টাকার মালিক নয় আর গরিবরা সবসময় গরিবই থাকে।
সরকার পতনের পর আমার চাচাতো ভাই তার বিদেশ থেকে স্যালারির টাকা ইসলামী ব্যাংক এ পাঠিয়েছে, সেই টাকা তোলার জন্য ১ মাস এটিএম এ ঘুরে ঘুরে তুলতে পারিনি। সর্বশেষ বিকাশে এডমানি করে করে ২৫ হাজার করে ক্যাশ আউট করা লাগছে। খুবই খারাপ সময় পার করছি আমরা।
ভালো একটা কথা মনে করায় দিলেন, বিকাশে অ্যাড মানিতে সপ্তাহে কয়দিন পঁচিশ হাজার করে ক্যাশ আউট করা যেতে পারে। যেমন ন্যাশনাল ব্যাংকে তারা শুধুমাত্র সপ্তাহের দুই দিন ১০ হাজার করে উইথড্র করার সুযোগ দিচ্ছে। দেখে আমারটায় বিকাশে এডমানি করা যায় কিনা।
ইসলামী ব্যাংক মানুষের অনেক আস্থার একটি ব্যাংক ছিল। এদিকে ন্যাশনাল ব্যাংক রেমিটেন্স আনার দিক থেকে অনেক এগিয়েছিল। সোনালী ব্যাংক সরকারি ব্যাংক থাকায় মানুষ এটিকে বিশ্বাস করত এবং প্রচুর পরিমাণ টাকা এখানে রাখতো। AB ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে অনেক খ্যাতি ছিল এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের ব্যাংকিং খাতে অনেক সাহায্য করতো তাই এই ব্যাংকেরও অনেকে খ্যাতি ছিল। কিন্তু এই ব্যাংকগুলারে পুরো ধ্বংস করে দিছে ১৬ বছরের একতরফা ক্ষমতা। প্রচুর পরিমাণে ঋণ খেলাপি করে। আর এই কারণেই সাময়িক সময়ের জন্য দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে বড় ট্রানজেকশন করতে নিষেধ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যেন ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক করতে পারেন কারণ ব্যাংকগুলো এমনি দুর্বল হয়েছে আর এই খবরগুলো শুনে জনগণ হুমড়ি খেয়ে টাকা তোলা শুরু করবে তখন ব্যাংকগুলোর দেউলিয়া হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না আর এগুলো ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সামনে বছরের শুরু থেকে নরমাল হতে পারে সবকিছু। এই ডিসেম্বর মাস এই সমস্যাগুলো পোহাতে হবে