উদ্যোক্তা হওয়ার বাসনা মনের গভীরে অনেকেই লালন করেন। তবে লালিত স্বপ্নকে পেছনে ঠেলতে নানা অজুহাত নিজের মনেই তৈরি করে মানুষ। আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কতটুকু সহায়ক? উদ্যোক্তা শুধু ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত না,যে ব্যক্তি একটি গান কিংবা কবিতা লিখেন,পাঠদানের নতুন নতুন পন্থা উন্মোচন করেন কিংবা নতুন কিছু বৈজ্ঞানিক বিষয় আবিষ্কার করেন তিনিও একজন উদ্যোক্তা। শুরু থেকেই পাঠ্যপুস্তক এ উদ্যোক্তা হওয়ার জন্যে জোর দিতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কবিতার ভাবার্থ,বিলাসির/হৈমন্তীর চরিত্র, এ সব বিষয় জানতে না চেয়ে প্রশ্ন করা হবে একই ভাবার্থ এর একটা কবিতা নিজে থেকে লিখুন। বর্ষায় ও শীতে কোন সবজি পাওয়া যায় সেটা না জেনে কিভাবে আপনি চাষ করবেন লিখুন। যেকোন বিষয়ের পরীক্ষা হবে- ৫০% ব্যবহারিক, ৫০% লিখিত। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রতিটি বিষয়ের সরাসরি মৌখিক পরীক্ষা নেয়া উচিৎ। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কোন বিভাগ থাকবে না সবাই মানবিক, বানিজ্য, বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়তে নয় গবেষণা করতে দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যে বিষয়ে গবেষণা করেছেন তাকে সেই ক্ষেত্রের বাহিরে কোন চাকুরীর আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে না প্রয়োজনে অধ্যয়নকালীন বিষয় পরিবর্তন করতে পারবেন। সমাজে একজন বিসিএস ক্যাডারের থেকে একজন কৃষক উদ্যোক্তাকে সম্মান বেশি দিতে হবে। মেয়ের পরিবার চাকুরিজীবীর থেকে একজন উদ্যোক্তার কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে আগ্রহী হতে হবে। সরকারকে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি একজন উদ্যোক্তাকেও তার নতুন উদ্ভোবনের জন্য আলাদা ভাবে সম্মানিত করতে হবে। কারণ দেশ স্বাধীন করছে মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে উন্নত করবে উদ্যোক্তারা। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশ তখনি হবে যখন এ দেশের মানুষ সত্যিকার অর্থে চাকুরীর পিছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হবেন। এটা দেশের সরকার জানেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয় উপায় কি তা জানলেও প্রয়োগ করেন না। যদিও উন্নত দেশের পূর্বশর্ত উদ্যোক্তা বাড়ানো। অনেক উদ্যোক্তা তাদের সম্প্রদায়ের উপর একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় খাদ্য সরবরাহ করে এবং পরিবেশ-বান্ধব পণ্য বিকাশের মাধ্যমে তাদের মঙ্গল উন্নত করে।নোবেল বিজয়ী ড.মোহাম্মদ ইউনুস, স্যার ফজলে হাসান আবেদ তাদেরও চাকরি দিয়েই জীবন শুরু হলেও পরবর্তীতে তারা হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। আপনি যদি সক্রিয় হন, তাহলে আপনার সাথে সেগুলি ঘটার জন্য অপেক্ষা করার পরিবর্তে আপনি জিনিসগুলিকে ঘটতে বাধ্য করেন। সাফল্যের আরও অনেক রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তা গুলো খুঁজে পেতে হয় নিজের বিচার-বিবেচনা দ্বারা। তাই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন। যদি আপনি নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনার বিবেক আপনাকে ভুল নির্দেশনা দিবে না। নিজেকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস না করলে আপনারা সিদ্ধান্তগুলো যথার্থ হবে না।